অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : আজ শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুন। আজ ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। হরেক রকমের বাহারি ফুল ও পত্রপল্লবে প্রকৃতি আজ বর্ণিল। বসন্তের মাতাল সমীরণে প্রকৃতিতে নিজেদের অস্তিত্ব প্রকাশ করছে টকটকে লাল রাঙা পলাশ।
শীতের রুক্ষতাকে পিছনে ফেলে প্রকৃতিকে আবার নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার আগমনী বার্তা নিয়ে আসে বসন্ত। গাছে গাছে নতুন পাতা গজায়। ফুলের মুকুল আসে। পাখি গান গায়। আর বাতাসে ভাসে মিষ্টি ফুলের ঘ্রাণ। প্রজাপতিরা রঙিন ডানা মেলে জানায় ঋতুরাজের আগমনী বার্তা। বসন্ত শুধু প্রকৃতিতেই নয় মানুষের মনেও জাগায় প্রাণের ছোঁয়া। তাই বসন্তের প্রথম দিনটিকে উদযাপন করতে সবাই মেতে ওঠে উৎসবে। নিজেকে সাজিয়ে তোলে বসন্তের রঙে।
কবির ভাষায়- ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কথায়- ‘বসন্ত আজ আসলো ধরায়, ফুল ফুটেছে বনে বনে, শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায়, ফাল্গুনী মোর মন বনে’। আসলে বসন্ত মানে নতুন প্রাণের কলরব। বসন্তে গাছে গাছে নতুন পাতা আসে। ডালে ডালে কোকিল। রঙিন ফুলে প্রকৃতি সুশোভিত হয়ে ওঠে। এই সময়ে বাতাসে ফুলের রেণু ছড়ায়। প্রকৃতি হয়ে উঠে অপরুপ।
ফাল্গুন নামটি এসেছে মূলত ফাল্গুনী নামে নক্ষত্র থেকে। খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে চন্দ্রবর্ষ ও সৌরবর্ষ উভয়ই মেনে চলা হতো। ফাল্গুন ছিল পূর্ণ চন্দ্রের মাস। ১৯৫০-১৯৬০ দশকেই আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা ফাল্গুন পালন শুরু হয়। সেসময় বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের সংস্কৃতি থেকে নিজেদের আলাদা করতে রবীন্দ্রসঙ্গীত শোনার পাশাপাশি বাঙালি নিয়মে পহেলা ফাল্গুন পালন শুরু করে।
অন্যদিকে আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। দুই উৎসবকে ঘিরে জোড়া উৎসবের আমেজ। বসন্ত উৎসবটি বাঙালির সব বয়সির হলেও এতে তারুণ্যের প্রভাবই থাকে বেশি। এ দিনটিতে তরুণ-তরুণীরা বাসন্তী রঙের পোশাকে নিজেদের সজ্জিত করে। ফুল বিনিময় ও ব্যবহারের ধুম পড়ে যায়। তবে এ সময়ে এই ধরনের আয়োজন গ্রামাঞ্চলের পরিবর্তে শহরাঞ্চলেই বেশি পরিলক্ষিত হয়।
তাই, ফাল্গুনের প্রথম দিনে ভালোবাসার উচ্ছল আনন্দ চারদিকেই রঙ ছড়াবে আজ। তারুণ্য মেতে উঠবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, শাহবাগ, রমনা বটমূল, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বোটানিক্যাল গার্ডেন থেকে পুরো রাজধানীতে ।
১৯৫২ সালে ফাল্গুন মাসেরই ৮ তারিখে (২১ ফেব্রুয়ারি) আমাদের দেশের বীর সন্তানরা বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে রাজপথে প্রাণ বিসর্জন দেন। তাই ৮ ফাল্গুন আমাদের জন্য শোকের দিন, সেদিক থেকে ফাল্গুন আমাদের জন্য বেদনার মাসও বটে।
বসন্ত উৎসবের দিনটিকে উপভোগ্য করে তুলতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন গ্রহণ করেছে নানা কর্মসূচি।
Leave a Reply